আন্তর্জাতিক আলু কেন্দ্র (সিআইপি)-বাংলাদেশ কর্তৃক আয়োজিত উন্নত পদ্ধতিতে কমলা শাঁসযুক্ত মিষ্টি আলুর ওপর প্রশিক্ষক প্রশিক্ষণ কোর্সে বক্তব্যরত প্রধান অতিথি কৃষি সম্প্রসারণ অধিপ্তর রংপুর অঞ্চলের অতিরিক্ত পরিচালক মো. শাহ আলম।
বাংলাদেশ বর্তমানে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হলেও পুষ্টিতে স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়নি। তাছাড়া বারো ধানের চাষে ব্যাপক সেচের কারণে ভূনিনস্থ পানির স্তরের গভীরতা নিচে নেমে যাওয়ার ফলে পরিবেশের উপর বিরূপ প্রভাব পড়ে। তাই পরিবেশবান্ধব এবং পুষ্টিসমৃদ্ধ কমলা শাঁসযুক্ত মিষ্টি আলু চাষের জোর দেওয়া দরকার।” আন্তর্জাতিক আলু কেন্দ্র (সিআইপি)-বাংলাদেশ কর্তৃক আয়োজিত উন্নত পদ্ধতিতে কমলা শাঁসযুক্ত মিষ্টি আলুর ওপর প্রশিক্ষক প্রশিক্ষণ কোর্সের প্রধান অতিথি কৃষি সম্প্রসারণ অধিপ্তর রংপুর অঞ্চলের অতিরিক্ত পরিচালক মো. শাহ আলম তাঁর বক্তব্যে ওপরের কথাগুলো উল্লেখ করেন। UKAID- এর আর্থিক সহায়তায় সিআইপি কর্তৃক আয়োজিত সাস্টেইন প্রজেক্ট এর অধীন প্রশিক্ষণ কোর্সটি শহরের এসোড ট্রেনিং সেন্টারে পরিচালিত হয়। প্রধান অতিথি কমলা শাঁসযুক্ত মিষ্টি আলুর গুরুত্ব তুলে ধরে আরও বলেন মিষ্টি আলু পুষ্টি সমৃদ্ধ, দামে সস্তা, উৎপাদন খরচ কম, ফলন বেশি এবং অবহেলিত চর এলাকায় সহজে চাষ করা যায়। তাছাড়া রংপুরের মাটি মিষ্টি আলুচাষের জন্য উপযোগী। তাই তিনি এ ফসল চাষে সকলকে জোর দেওয়া উচিত বলে উল্লেখ করেন।
প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সিআইপি-বাংলাদেশের কান্ট্রি ম্যানেজার মীর আলী আসগর এবং বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর রংপুর জেলার উপপরিচালক স ম আশরাফ আলী, কৃষি তথ্য সার্ভিসের আঞ্চলিক বেতার কৃষি অফিসার মো. আবু সায়েম এবং গঙ্গাচড়া উপজেলা কৃষি অফিসার আব্দুল্লাহ আল মামুন।
উপপরিচালক স ম আশরাফ আলী বলেন ক্রমবর্ধমান তাপমাত্রা বৃদ্ধির ফলে পরিবেশের উপর বিরূপ প্রভাব পড়ছে। তাই আমাদের ফসল বিন্যাসে এর পরিবর্তন আনতে হবে। এজন্য পরিবেশবান্ধব ও খরা সহনশীল কমলা শাঁসযুক্ত মিষ্টি আলু ক্রপিং প্যাটার্ন এ অন্তর্ভুক্ত করা হবে সময়োপযোগী পদক্ষেপ।
আঞ্চলিক বেতার কৃষি অফিসার মো. আবু সায়েম বলেন আমাদের বাণিজ্যিক কৃষির দিকে ধাবিত হতে হবে। এজন্য তথ্যপ্রযুক্তির সাথে সম্পৃক্ত হতে হবে। তিনি আরও বলেন তিস্তা ব্যারেজ হতে যমুনা সেতু পর্যন্ত প্রায় ৮৫ হাজার হেক্টর চর এলাকাতে কমলাশাঁসযুক্ত মিষ্টি আলু চাষের ব্যাপক সম্ভাবনার কথা আছে।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন সিআইপি-বাংলাদেশের সেক্টর লিডার ড. শফিউর রহমান। এছাড়া আরও বক্তব্য প্রদান করেন গঙ্গাচড়া উপজেলা কৃষি অফিসার আব্দুল্লাহ আল মামুন, ব্র্যাকের আঞ্চলিক ব্যবস্থাপক নাজিম উদ্দিন প্রমুখ।
মাঠ পর্যায়ে বাস্তবায়নকারী পার্টনার এনজিও ব্র্যাকের মাঠ কর্মী এবং কৃষি সম্প্রসারণের অধিদপ্তরের উপসহকারী কৃষি অফিসারগণসহ মোট ৩০ জন প্রশিক্ষণার্থী অংশগ্রহণ করেন। উল্লেখ্য যে, সিআইপি-বাংলাদেশ বাংলাদেশে রংপুর, গাইবান্ধা, কুড়িগ্রাম এবং সাতক্ষিরা জেলায় ৩৫০০ কৃষককে মিষ্টি আলুচাষের আওতায় আনার লক্ষ্যমাত্রা স্থির করেছে।